সমবায়ের মাধ্যমে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাপক আকারে ঘটানো সম্ভব এ কথা আর মুখরিত বাণী নয় বরং এটা বাস্তবতা। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমবায় এর ব্যাপারে দূরদৃষ্টি বর্তমান সমবায়কে নিয়ে গেছে বহুদূর। সমবায়ের মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়ে যাওয়া একটা সফল সমিতির নাম কাঁচিঝুলি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড, সমিতির ঠিকানাঃ কাচিঝুলি মোড়, জেল রোড, সদর, ময়মনসিংহ।
প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এই সমিতি। সেই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই সমিতি আজ পর্যন্ত শৃঙ্খলা এবং সুনাম এর সাথেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে সমবায়ের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ময়মনসিংহে।
স্বল্প মূলধন নিয়ে সমিতি যাত্রা শুরু করে আজকে সমবায় সেক্টরে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে। বর্তমানে সমিতির সদস্য সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার। আর্থিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সমিতিটি সামাজিক বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নশীল কর্মকাণ্ডে নিজেদেরকে সক্রিয় রেখেছে।
কাচিঝুলি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি জনাব মোঃ মাহমুদুর রহমান জানান, শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং কর্মচারীদের আন্তরিকতা দিয়ে সমিতি আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে।
বর্তমানে আর্থিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের উৎপাদনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। যার মধ্যে শাকসবজি উৎপাদন, কাঁচামাল উৎপাদন করে সেটাকে প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাতকরণ, এবং বিভিন্ন কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স এর শো-রুম দিয়ে সমিতির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বেগবান করে তুলছে।
নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎপাদনের পর সে গুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করতে সমিতি প্রতিষ্ঠা করেছে মা পিওর এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস । যেটার বিপণন কাজের জন্য চাওয়া-পাওয়া ডটকম নামে একটা ই-কমার্স প্লাটফর্ম তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ময়মনসিংহ শহরে ব্যাপক আকারে ঋণ প্রদান করেছে প্রান্তিক মানুষদের। তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তুলতে সিএনজি অটোরিকশা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার যানবাহন এবং নতুন নতুন ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করে অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল করতে অবদান রেখে চলছে।
অত্র প্রতিষ্ঠান এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাজমুল কবীর জানান, বর্তমানে যে সকল কার্যক্রম চলছে এর পাশাপাশি ভবিষ্যতে নতুন ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার সমবায় বান্ধব সরকার, তাই অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনতে সমবায়ের ভূমিকা অপরিসীম। তাই আমরাও চেষ্টা করে যাচ্ছি কিভাবে নিজেদেরকে আরো বেশি কর্মকাণ্ডে সংযুক্ত করা যায়।
উল্লেখ থাকে যে, গত দুই বছর ধরে এই সমিতির একাউন্টস পরিচালনায় ব্যবহার হচ্ছে সমিতি কিপার সফটওয়্যার টি। মাঠকর্মীরা ফিল্ড থেকেই তাদের কালেকশনগুলো পোস্টিং দিয়ে ফেলে। এতে করে অফিসে এসে লম্বা সময় ধরে হিসাব নিকাশ মিলাতে হয় না।
সমিতির কোষাধ্যক্ষ জনাব রতন চক্রবর্তী বলেন,” বিগত দিনগুলোতে আমরা হিসাব-নিকাশ নিয়ে বেশ প্রেসারে থাকতাম। শুরু থেকেই আমাদের সভাপতি মহোদয় দিনের কাজ দিনের শেষ করার ব্যাপারে বেশ কঠোর ছিলেন। আমরা প্রায়শই রাত দুইটা থেকে তিনটা পর্যন্ত হিসাব মেলাতে প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করতাম। বর্তমানে আমরা সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে প্রতিষ্ঠান ক্লোজ করে ফেলতে পারি। প্রযুক্তি ব্যবহার করতে গিয়ে আমরাও মাঝেমধ্যে সমস্যার মধ্যে পড়েছি। তবে সেক্ষেত্রে সমিতি কিপার কর্তৃপক্ষ আন্তরিকতার সাথে আমাদেরকে সেবা প্রদান করে আসছেন। “